মহাভারত

দুষ্মন্ত

যযাতির বংশধরদের মধ্যে পুরু রাজা হয়ে ভারতের যে অংশে রাজত্ব করতে থাকেন, তখন তার নাম ছিল প্রতিষ্ঠান। রামচন্দ্রের পূর্বপুরুষ মান্ধাতার আমল থেকে পুরুর বংশধরদের রমরমা কমতে থাকে। পুরুর বংশেই জন্মগ্রহণ করেন রাজা দুষ্মন্ত। পুরুবংশের হৃতগৌরব পুনরুদ্ধার করেন তিনি। একদিন জঙ্গলে মৃগয়া করতে এসে শকুন্তলার সাথে আলাপ হয় এবং তাকে গান্ধর্বমতে বিয়ে করেন, কিন্তু রাজ্যে ফিরে সে বিয়ের কথা ভুলে যান। পরে আকাশ থেকে দৈববাণী হলে রাজা শকুন্তলাকে মেনে নেন এবং তৎক্ষণাৎ তাদের সন্তান ভরতকে যুবরাজপদে বসিয়ে দেন।

একসময়  মৃগয়াতে গিয়ে তিনি  কন্বমুনির আশ্রমে যখন মুনির পালিতা কন্যা শকুন্তলাকে দেখেন, তখন তাঁর রূপে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে বিবাহ করতে চান। শকুন্তলাও তাঁর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন এবং তাঁকে বিবাহ করতে রাজি হন। কিন্তু বিবাহের জন্য একটি শর্ত রাখেন যে, তাঁদের গর্ভজাত পুত্রই দুষ্মন্তের অবর্তমানে সিংহাসনে বসবেন।  রাজা তাতে রাজি হয়ে  শকুন্তলাকে গান্ধর্ব মতে বিবাহ করেন। তারপর শকুন্তলাকে কথা দেন যে তাঁকে  নিয়ে যাবার জন্য পরে তিনি  সেনা পাঠাবেন এবং এই কথা দিয়ে রাজা নিজের প্রাসাদে ফিরে যান। যথাসময়ে শকুন্তলার সর্বদমন নামে একটি পুত্র হয়. রাজার অপেক্ষায় শকুন্তলা দিন পার  আসে না, না আসে তার সৈন্য। তাঁর  পুত্র একটু বড় হলে কণ্ব মুনির আশীৰ্বাদ নিয়ে শকুন্তলা সপুত্র দুষ্মন্তের কাছে আসেন। কিন্তু দুষ্মন্ত শকুন্তলাকে না চেনার ভান করে অপমানজনক নানান কথা বলেন। শকুন্তলা সেই সব শুনে যখন রাগ করে চলে যাচ্ছিলেন, তখন আকাশ থেকে দৈববাণী  হল যে,শকুন্তলা যা বলছেন তা সত্যি, দুষ্মন্তই এই পুত্রের পিতা এবং এর নাম হবে ভরত। এটা শোনা মাত্র দুষ্মন্ত শকুন্তলাকে গ্রহণ করেন।

দুষ্মন্তের পর তার ছেলে ভরত এক মহান রাজা হয়ে দেশ শাসন করে। তার নামেই দেশের নাম ভারত এমন বলা হয়।

তথ্যসূত্র


  1. মহাভারতের ভারতযুদ্ধ ও কৃষ্ণ - নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী পৃষ্ঠাঃ ১৩৫-১৩৮
  2. "মহাভারতের একশোটি দুর্লভ মুহূর্ত", আনন্দ পাবলিশার্স, পঞ্চম মুদ্রণ - ধীরেশচন্দ্র ভট্টাচার্য, অধ্যায় ৬- দুষ্মন্তের ভরতকে গ্রহণ -ভরাট বংশের প্রতিষ্ঠা , পৃষ্ঠাঃ ২৮-৪৩

 

One comment

আপনার মতামত জানান